Bengali Grammar Somas (সমাস কি) | Types Of Somas (সমাসের প্রকার)

Spread the love

বাংলা ব্যাকরণে সমাস (Somas) হলো এমন এক বিষয় যা আমাদের মধ্যে প্রায় সকলেই পড়তে গেলে আমরা আর পড়ি না বা পড়তে চাই না এবং সেটা শিখতেও চাই না কারণ আমরা সবাই সমাস কি তা সঠিকভাবে বুঝতে পারি না আর তাই এটি খুব কঠিন একটা বিষয় মনে করে সমাস শেখার উপর গুরুত্ব দেই না। আমাদের মধ্যে অনেকে আবার সমাসকে “ছমাস”ও বলে থাকেন, এটা শিখতে নাকি ছয় মাস সময় লাগে তাই। সমাস বিষয়টা কিন্তু এতো বেশি কঠিনও নয় যে এটি শিখতে ছয় মাস সময় লাগবে। আমরা যদি একটু  বুঝে নিয়ে শেখার চেষ্টা করি তাহলে খুব সহজেই আমরা সমাস (Somas) শিখে নিতে পারবো। 

আমাদের মধ্যে অনেকে আবার সমাস কি তা বোঝার চেষ্টা না করে মুখস্ত করে শেখার চেষ্টা করে, আসলে ছোটবেলা থেকেই যখন আমরা সমাস শেখার চেষ্টা করি ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণী শ্রেণীতে, তখন থেকেই আমরা সমাসকে না বুঝে শুধুমাত্র মুখস্থ করার মাধ্যমে শেখার চেষ্টা করি তাই সমাস আমাদের শেখা হয়ে ওঠে না কারণ সমাস কে না বুঝে শুধুমাত্র মুখস্থ করার মাধ্যমে কখনোই শেখা যায় না। 

আজ আমরা এই টিউটোরিয়ালটিতে সমাস কি তা জানবো, সমাস কিভাবে করতে হয় এবং সমাসের প্রকারগুলি কি কি সে বিষয়েও জানবো। আজকের এই টিউটোরিয়ালটি Somas Tutorial Series এর প্রথম টিউটোরিয়াল, আমরা এই সিরিজের পরবর্তী টিউটোরিয়ালগুলোতে সমাসের প্রকারগুলি কিভাবে চিনতে হয় সে বিষয়েও বিস্তারিতভাবে জানবো এবং সেগুলি শুধুমাত্র মুখস্থ করে নয় সেগুলি আমরা বোঝার মাধ্যমে শিখবো। 

সমাস (Somas) কি ?

পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত দুই বা দুইয়ের অধিক পদের মিলনে যখন তা একপদে পরিণত হয় তখন তাকে সমাস (Somas) বলা হয়। সমাস বিষয়টি কোনো কিছুকে বড়ো করা শেখায় না, সমাস সবসময় কোনোকিছুকে ছোট করতে শেখায় অর্থাৎ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুই বা দুইয়ের অধিক শব্দ বা শব্দগুচ্ছের মিলনে যখন তা ছোটো হয়ে একটি শব্দে পরিণত হয় তখন সেই শব্দকে সমাস বলা হয়। এককথায় বলতে গেলে সমাস যে কাজটি করে সেটি হলো কোনো বাক্যকে বা শব্দগুচ্ছকে ছোট করে সেই বাক্যের অর্থ একটি শব্দে প্রকাশ করে।   

উদাহরণস্বরূপ:-

১. রথকে দেখা = রথদেখা  (এখানে “রথকে” এবং “দেখা” এই দুইটি পদের মিলনে একপদে পরিণত হয়ে তা “রথদেখা” হয়েছে, তাই এখানে “রথদেখা” শব্দটিই হচ্ছে “রথকে”এবং “দেখা” এই  শব্দ দুইটির সমাস (Somas)। 

২. রাজার পুত্র = রাজপুত্র (এখানে “রাজার” এবং “পুত্র” এই দুইটি পদ মিলিত হয়ে যে নতুন পদে পরিণত হয়েছে তা হলো “রাজপুত্র” এবং এই “রাজপুত্র” শব্দটিই হলো “রাজার” এবং “পুত্র” এই শব্দ দুইটির সমাস। 

আমাদের জীবনে সমাসের (Somas) ব্যবহার 

আমরা সমাস (Somas) কে বাংলা ব্যাকরণের খুব বেশি কঠিন একটি বিষয় মনে করি কিন্তু আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমাদের প্রতিদিনের কথাবার্তায় সমাস অনেকবার ব্যবহার করে থাকি। উদাহরণস্বরূপ আমরা এখানে একটি মাছির উদাহরণ নিতে পারি। মাছি কিন্তু অনেক ধরণের হয়, কিছু কিছু মাছি আছে যারা এমাজন, আটলান্টিক ফরেস্ট ইত্যাদির মতো বৃহৎ এবং ঘন জঙ্গলে থাকে। এই মাছিগুলি খুব বেশি মারাত্মক হয়, এরা হুল ফোটালে মানুষ মারাও যেতে পারে। এই গুলি ছাড়া আরও কিছু মাছি আছে যারা অনেক খারাপ খারাপ ও দুর্গন্ধময় জায়গায় যায় এবং বিভিন্ন ধরণের রোগ ছড়ায়, এই গুলি হলো আরেক ধরণের মাছি।  এছাড়াও আরও কিছু মাছি আছে যারা খারাপ জায়গায় যায় না, এরা ভালো জায়গায় যায় অর্থাৎ বিভিন্ন ফুল গাছে গিয়ে ফুলের মধু সংগ্রহ করে। তো আমরা এখানে যেকোনো ধরণের মাছির কথা বলতে গেলে কিরকম বলবো —- 

উদাহরণ হিসাবে আমরা এখানে তৃতীয় ধরণের মাছিটাকেই নিলাম কারণ এমাজন জঙ্গলে তো আমরা যাচ্ছি না তাই সেই ভয়ঙ্কর আর বিষাক্ত মাছি গুলি আমরা দেখছিও না, কিন্তু দ্বিতীয় বা তৃতীয় ধরণের মাছি আমরা অনেকসময়ই দেখতে পাই। তো মনে করো আমরা মধু সংগ্রহ করে যেসব মাছি সেইরকম একটি মাছিকে দেখেছি, অর্থাৎ আমরা একটি মৌমাছিকে দেখেছি, তো এই কথাটি যখন আমরা অন্য কাউকে বলতে যাবো তখন আমরা কিভাবে বলবো ? 

আমরা কি এরকম বড়ো করে বলবো যে “মধু সংগ্রহ করে যে মাছি আমরা সেইরকম মাছি দেখেছি”……. না কখনোই না, আমরা কখনোই এরকম বড়ো করে বলি না, আমরা এখানে মধু সংগ্রহ করে যে মাছি সেইরকম মাছি দেখেছি এটা বোঝানোর জন্য বাক্যটিকে ছোট করে আমরা একটি মৌমাছি দেখেছি এরকম বলবো কারণ এটাই সহজ আর এভাবেই আমরা সমাসকে ব্যবহার করে থাকি এবং সেটা কিভাবে তা নিচের লিখাগুলো পড়লেই বুঝতে পারবে — 

মধু সংগ্রহ করে যে মাছি = মৌমাছি 

এখানে “মধু সংগ্রহ করে যে মাছি” এই বাক্যটি ৫ টি শব্দ দিয়ে গঠিত একটি বাক্য আর পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এই পাঁচটি শব্দের মিলনে তা একপদে পরিণত হয়ে যে নতুন শব্দটি তৈরী হয়েছে সেই মৌমাছি শব্দটি হলো এই ৫টি শব্দ থাকা বাক্যটির সমাস এবং আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বড়ো বাক্যটি না বলে সবসময়ই বাক্যটির সমাস কেই বলে থাকি। এইভাবে আরও হাজার হাজার সমাস আছে যা আমরা আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাপনে কথা বলার সময় ব্যবহার করে থাকি। 

সমাস (Somas) কি কি কাজ করে করে :

সমাস প্রধানত নিম্নলিখিত তিনটি কাজ করে থাকে :-

  • একপদীকরণ :- সমাস কোনো বাক্য বা শব্দগুচ্ছকে একপদে পরিণত করে। 
  • সংক্ষেপন :- সমাস বড়ো বাক্যকে সংক্ষিপ্ত বা সংক্ষেপন করে ছোট শব্দে পরিণত করে। 
  • পদের মিলন :- সমাস কোনো বাক্যের মধ্যে থাকা দুই বা ততোধিক পরস্পর সম্পর্কযুক্ত শব্দের অর্থপূর্ণ মিলন ঘটায়। 

Related Post :- What is Present Tense… Parts of Present Tense.

সমাসের বিভিন্ন অংশ সমূহের সঙ্গে পরিচয়    

সমাসের বেশ কিছু অংশ আছে যেমন বিগ্রহ বাক্য বা ব্যাসবাক্য, সমস্ত পদ, সমস্যমান পদ, পূর্বপদ, পরপদ বা উত্তরপদ ইত্যাদি।তো আমরা এবার এই অংশগুলির সঙ্গে পরিচিত হবো —

সমস্ত পদ (Somostho Pod) বা সমাসবদ্ধ পদ

পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুই বা বহুপদের মিলনে যখন তা একপদে পরিণত হয় তখন সেই পদটিকে সমস্তপদ বলা হয়। অর্থাৎ কোনো বাক্যকে একপদে পরিণত করার পর যখন সেই পদটি সম্পূর্ণ বাক্যটির অর্থ প্রকাশ করে তখন সেই পদটিকে সমস্ত পদ বলে। আরও ভালোভাবে বোঝানোর জন্য উদাহরণ হিসাবে নিচের বাক্যটাকে নিলাম– যেমন —

“সিংহের মতো পুরুষ = সিংহপুরুষ” ….. এখানে “সিংহের মতো পুরুষ” বাক্যটি একপদে পরিণত হয়ে “সিংহপুরুষ” হয়েছে এবং যেহেতু “সিংহপুরুষ” বলতেই “সিংহের মতো পুরুষ” এই বাক্যের সমস্ত অর্থটাই বোঝাচ্ছে তাই এখানে “সিংহপুরুষ” শব্দটি হলো সমস্ত পদ। এককথায় বলতে গেলে কোনো বাক্যের বা শব্দগুচ্ছের সমাসই হলো বাক্যটির বা শব্দগুচ্ছগুলির সমস্তপদ। 

বিগ্রহবাক্য বা ব্যাসবাক্য (Bigroho Bakyo/ Byas Bakyo)

যে বাক্যটা থেকে সমাস তৈরী হয় তাকে ব্যাসবাক্য বলে অর্থাৎ যে বাক্য বা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত শব্দগুচ্ছগুলি ছোট হয়ে একপদে পরিণত হয় অর্থাৎ সমাস হয় সেই বাক্যটিকে বা শব্দগুচ্ছগুলিকে ব্যাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্য বলে। ব্যাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্যের আরেকটি নাম হলো সমাসবাক্য। উদাহরণস্বরূপ-

মধু সংগ্রহ করে যে মাছি = মৌমাছি 

উপরোক্ত উদাহরণটির মধ্যে “মধু সংগ্রহ করে যে মাছি” এই বাক্যটি হলো ব্যাস বাক্য, বিগ্রহ বাক্য বা সমাস বাক্য আর “মৌমাছি” শব্দটি হলো বাক্যটির সমাস। এক্ষেত্রে আমরা সবসময়ই সমাসের ব্যবহার করে থাকি, আমরা মধু সংগ্রহ করা কোনো মাছিকে বোঝাতে কখনোই “মধু সংগ্রহ করে যে মাছি” এইরকম ভাবে সম্পূর্ণ একটি বড়ো বাক্য কখনোই বলি না, আমরা সবসময় এই বাক্যের সমাস অর্থাৎ “মৌমাছি” শব্দের ব্যবহার করে থাকি। 

সমস্যমান পদ (Somossoman Pod)

ব্যাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্যের মধ্যে থাকা দুই বা ততোধিক পদ যদি সমাসবদ্ধ পদ বা সমস্তপদে বিদ্যমান থাকে তখন এই পদগুলোকে সমস্যমান পদ বলে। অন্যভাবে বলতে গেলে ব্যাসবাক্যের যে পদগুলি সমাসে বিদ্যমান থাকে সেই পদগুলোকেই সমস্যমান পদ বলা হয় । উদাহরণস্বরূপ –

কাজলের মতো কালো = কাজলকালো (যেহেতু “কাজলের মতো কালো” বাক্যটির সমাস “কাজলকালো” পদটির মধ্যে “কাজল” ও “কালো” এই পদ দুইটি বিদ্যমান আছে তাই এই পদ দুইটি হলো সমস্যমান পদ।)

রাজার পুত্র = রাজপুত্র (যেহেতু “রাজার পুত্র ” বাক্যটির সমাস “রাজপুত্র” পদটির মধ্যে “রাজা” ও “পুত্র” এই পদ দুইটি বিদ্যমান আছে তাই এই পদ দুইটি হলো সমস্যমান পদ।)

পূর্বপদ এবং পরপদ বা উত্তরপদ (Purbopod and Poropod or Uttorpod)

অর্থ অনুসারে সমস্তপদ বা সমাসবদ্ধ পদকে দুইভাগে ভাগ করলে প্রথম যে ভাগটি পাওয়া যাবে সেটি হবে পূর্বপদ এবং শেষের যে ভাগটি থাকবে সেটি হবে পরপদ বা উত্তরপদ। উদাহরণস্বরূপ –

১. রথ কে দেখা = রথদেখা (এই উদাহরণটিতে “রথ কে দেখা” বাক্যটির সমস্তপদ বা সমাসবদ্ধ পদ হলো “রথদেখা” এবং এই সমাসবদ্ধ পদকে অর্থ অনুসারে দুইভাগে ভাগ করলে প্রথম যে ভাগটি হবে সেটি হলো “রথ” এবং পরের বা শেষের যে ভাগটি হবে সেটি হলো “দেখা” । তো যেহেতু সমাসবদ্ধ পদের প্রথম ভাগকে পূর্বপদ এবং শেষের ভাগকে পরপদ বলা হয় সেইহেতু এখানে এই উদাহরণটিতে “রথ” শব্দটি হবে পূর্বপদ এবং “দেখা” শব্দটি হবে পরপদ বা উত্তরপদ। 

২. মধু সংগ্রহ করে যে মাছি = মৌমাছি  (এই উদাহরণটিতে “মধু সংগ্রহ করে যে মাছি” বাক্যটির সমস্তপদ বা সমাসবদ্ধ পদ হলো “মৌমাছি” এবং এই সমস্তপদ বা সমাসবদ্ধ পদকে অর্থ অনুসারে দুইভাগে ভাগ করলে প্রথম যে ভাগটি পাওয়া যাবে সেটি হবে “মৌ” এবং পরে বা শেষে যে ভাগটি পাওয়া যাবে সেটি হবে “মাছি” । তো যেহেতু সমাসবদ্ধ পদের প্রথম ভাগকে পূর্বপদ এবং শেষের ভাগকে পরপদ বলা হয় সেইহেতু এই উদাহরণটিতে “মৌ” শব্দটি হবে পূর্বপদ এবং “মাছি” শব্দটি হবে পরপদ বা উত্তরপদ।

সমাস কিভাবে নির্ধারণ করতে হয়

সমাস নির্ণয় করার সময় পূর্বপদ ও পরপদ বা উত্তরপদ এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে কারণ পূর্বপদ ও পরপদের উপর ভিত্তি করে আমরা অনেকগুলি সমাস নির্ণয় করতে পারি। কোনো কোনো সমাসে পূর্বপদ প্রাধান্য পায়, কোনো কোনো সমাসে পরপদ প্রাধান্য পায়, কিছু কিছু সমাসে উভয়পদই প্রাধান্য পায় আবার কিছু কিছু সমাসে পূর্বপদ ও পরপদের কোনোটাই প্রাধান্য পায় না। তো এইভাবেই পূর্বপদ ও পরপদের মধ্যে কোন পদ প্রাধান্য পায় এর উপর ভিত্তি করে সমাস নির্ধারণ করা যায়। 

যেমন – “মধু সংগ্রহ করে যে মাছি” ব্যাসবাক্যটির সমাস হলো “মৌমাছি” এবং এই মৌমাছি সমাসটির মধ্যে পূর্বপদ হলো “মৌ” এবং “পরপদ হলো “মাছি”, এবার “মৌমাছি” বলতে আমরা কি বুঝি বা কি দেখি ? — “মধু” দেখি নাকি মাছি জাতীয় কোনো প্রাণী দেখি………. অবশ্যই আমরা মৌমাছি বলতে মধু বুঝি না বা মধু দেখি না, মৌমাছি বলতে আমরা মাছি জাতীয় একটি প্রাণী বুঝি তাই এখানে “মৌমাছি” সমাসটির মধ্যে পরপদ প্রাধান্য পেয়েছে।     ঠিক একইভাবে “মাতা ও পিতা” ব্যাসবাক্যটির সমাস হলো “মাতাপিতা” এবং এর পূর্বপদ হলো “মাতা” এবং পরপদ বা উত্তরপদ হলো “পিতা” কিন্তু এই সমাসটির মধ্যে মাতা ও পিতা দুইজনকেই সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তাই এখানে উভয়পদেরই সমান প্রাধান্য পেয়েছে। 

সমাসের প্রকার :

সমাস প্রধানতঃ ছয় প্রকার – দ্বন্দ্ব সমাস, বহুব্রীহি সমাস, অব্যয়ীভাব সমাস, তৎপুরুষ সমাস, দ্বিগু সমাস এবং কর্মধারয় সমাস। এইগুলির মধ্যে দ্বিগু ও কর্মধারয় সমাস দুইটি আলাদা আলাদা সমাস হলেও এই দুইটি সমাস তৎপুরুষ সমাসের অন্তর্গত। 

দ্বন্দ্ব সমাস (Dando Somas)

দ্বন্দ্ব সমাসে পূর্বপদ ও পরপদ উভয়ই সমান প্রাধান্য পায় অর্থাৎ দ্বন্দ্ব সমাসে পূর্বপদ ও উত্তরপদ উভয় পদেরই সমান গুরুত্ব থাকে। যেমন- স্বামী ও স্ত্রী = স্বামীস্ত্রী, মাতা ও পিতা = মাতাপিতা ইত্যাদি।

 
(দ্বন্দ্ব সমাসের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে শেখার জন্য এখানে ক্লিক করে দ্বন্দ্ব সমাসের Tutorial টি পড়তে পারো)

বহুব্রীহি সমাস (Bohubrihi Somas)

বহুব্রীহি সমাসে পূর্বপদ ও পরপদ উভয়ের মধ্যে কোনোটাই প্রাধান্য পায় না, এখানে একটি নতুন অর্থ প্রাধান্য পায়। যেমন – চন্দ্র চূঁড়ায় যাহার = চন্দ্রচূড়, রত্ন গর্ভে যাহার = রত্নগর্ভা ইত্যাদি। 


(বহুব্রীহি সমাসের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে শেখার জন্য এখানে ক্লিক করে বহুব্রীহি সমাসের Tutorial টি পড়তে পারো)

অব্যয়ীভাব সমাস (Abyoyivab Somas)

যে সমাসে পূর্বপদে একটি অব্যয় (সংস্কৃত উপসর্গ বা যথা) থাকে এবং সমাসবদ্ধ হওয়ার পর এই অব্যয় পদটির অর্থই প্রধান হয়ে উঠে তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে। যেমন – গতির অভাব = বেগতিক, সাধ্যকে অতিক্রম না করে = যথাসাধ্য ইত্যাদি। 


(অব্যয়ীভাব সমাসের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে শেখার জন্য এখানে ক্লিক করে অব্যয়ীভাব সমাসের Tutorial টি পড়তে পারো)

দ্বিগু সমাস (Digu Somas)

দ্বিগু সমাসে পরপদে প্রাধান্য পায় এবং এই সমাসের শুরুতে সংখ্যা থাকে অর্থাৎ যে সমাসের শুরুতে সংখ্যা থাকে বা সংখ্যজাতীয় কিছু থাকে এবং এর সমাসে পরপদ বা উত্তরপদের প্রাধান্য থাকে তাকে দ্বিগু সমাস বলে। যেমন – সপ্ত ঋষির সমাহার = সপ্তর্ষি, চারটি রাস্তার সমাহার = চৌরাস্তা ইত্যাদি। 


(দ্বিগু সমাসের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে শেখার জন্য এখানে ক্লিক করে দ্বিগু সমাসের Tutorial টি পড়তে পারো)

কর্মধারয় সমাস (Karmodharayo Somas)

কর্মধারয় সমাসেও দ্বিগু সমাসের মতো পরপদে প্রাধান্য পায় এবং এই সমাসের শুরুতে সংখ্যা থাকে না এই সমাসে কোনোকিছুর তুলনা বোঝায় অর্থাৎ যে সমাসের পরপদ বা উত্তরপদের প্রাধান্য থাকে এবং তা কোনোকিছুর তুলনা বোঝায় তাকে কর্মধারয় সমাস বলে। যেমন – কাজলের মতো কালো = কাজলকালো, সিংহের মতো পুরুষ = সিংহপুরুষ ইত্যাদি। 


(কর্মধারয় সমাসের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে শেখার জন্য এখানে ক্লিক করে কর্মধারয় সমাসের Tutorial টি পড়তে পারো)

তৎপুরুষ সমাস (Tatpurus Somas)

তৎপুরুষ সমাসেও দ্বিগু ও কর্মধারয় সমাসের মতো পরপদে প্রাধান্য পায় এবং এই সমাসের শুরুতে সংখ্যা থাকে না বা এটা কোনোকিছুর তুলনাও বুঝায় না, কিন্তু এই সমাসে পূর্বপদে বিভক্তি যুক্ত থাকে অর্থাৎ যে সমাসের পরপদ বা উত্তরপদের প্রাধান্য থাকে এবং এর পূর্বপদে বিভক্তি যুক্ত থাকে তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন – বুদ্ধিদ্বারা হীন = বুদ্ধিহীন, রথকে দেখা = রথদেখা ইত্যাদি ।

 
(তৎপুরুষ সমাসের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে শেখার জন্য এখানে ক্লিক করে তৎপুরুষ সমাসের Tutorial টি পড়তে পারো)

………………………………………………………………………

তো এটি ছিল সমাসের বিষয়ে প্রথম টিউটোরিয়াল, এটিতে আমরা সমাস সম্বন্ধে প্রাথমিক ধারণা পেয়েছি, সমাস কি তা জেনেছি, সমাসের অংশ ও সমাসের প্রকার গুলোর বিষয়েও জেনেছি এবং সমাস কিভাবে নির্ণয় করতে হয় সেটাও জেনেছি। সমাসের পরবর্তী টিউটোরিয়াল এ আমরা সমাসের প্রকার গুলোর বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানবো। এই টিউটোরিয়ালে যতটুক পড়ানো হয়েছে এর মধ্যে কারো কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে বা কিছু না বুঝলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারো, আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এর সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবো। টিউটোরিয়ালটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ। 

Next Tutorial- Read it Now – সহজে শিখি সমাস । দ্বন্দ্ব, অব্যয়ীভাব, বহুব্রীহি সমাস 


Spread the love

7 thoughts on “Bengali Grammar Somas (সমাস কি) | Types Of Somas (সমাসের প্রকার)”

    • Pleasure is all mine and also Happy to have a reader like you… Please come back again and again in our site and share our contents if you find it useful.

      Reply
  1. অসংখ্য ধন্যবাদ এডমিন সাহবে কে।। এতো সুন্দর করে সমাস টা ব্যাখ্যা করার জন্য। অনেক দোয়া এবং শুভ কামনা রইলো।

    Reply
    • ধন্যবাদ আপনাকেও…. আপনার মতো পাঠক পেয়ে আমরাও খুশি… এই ওয়েবসাইট টি বার বার ভিসিট করবেন এবং এর আর্টিকেলগুলো প্রয়োজনীয় মনে হলে শেয়ার করবেন। আপনার জন্যও অনেক অনেক শুভকামনা রইলো ।

      Reply
    • Pleasure is all mine and also Happy to have a reader like you… Please come back again and again in our site and share our contents if you find it useful.

      Reply

Leave a Comment